ভিডিও কনফারেন্সে রাণী এলিজাবেথকে দিয়ে উদ্বোধন করালেই উত্তম হতো

Comments Off on ভিডিও কনফারেন্সে রাণী এলিজাবেথকে দিয়ে উদ্বোধন করালেই উত্তম হতো
ভিডিও কনফারেন্সে রাণী এলিজাবেথকে দিয়ে উদ্বোধন করালেই উত্তম হতো
===================================
বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান । বাংলাদেশের যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিক হারে জায়গা করে নিয়েছেন – তন্মধ্যে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি অন্যতম । যে ব্রিটিশরা সমুদ্রে এবং সামুদ্রিক বিজ্ঞানে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েমের মাধ্যমে সারা বিশ্ব শাসন করেছে , তাদের সেই সরকারী সংস্থা( Maritime and Coastguard Agency )র গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদে প্রায় অর্ধেক কিংবা তারও বেশি বাংলাদেশী জায়গা করে নিয়েছেন । আমার ব্যাচমেইট এবং বন্ধুদের মধ্যে তিন জন যোগ দিয়েছেন এবং আরেকজন পাইপ লাইনে রয়েছেন ।

কিন্তু এদেশের সব জায়গায় হয় ভোটের জোর , না হয় অন্য জোর কাজে লাগে । এই দুটির কোনটিই না থাকাতে দেশের সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তিদের নেক নজর এই প্রতিষ্ঠানটির উপর খুব একটা পড়ে নি । বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি সহ এই ঘরানার অন্য একাডেমির পাসিং আউট বা গ্র্যাজুয়েশন প্যারেডে প্রায়শই সরকার প্রধান স্বশরীরে চলে গেলেও এই প্রতিষ্ঠানে এসেছেন হাতে গোনা দুয়েকবার । এটা নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের এলামনাইদের মধ্যে কোনদিন কোনও অনুতাপ ছিল না । বরং রাজনীতি সহ অন্য সকল প্রভাবের বাইরে থাকায় একধরণের স্বস্তি ছিল । সেই স্বস্তিকে ঘিরে একটা আলাদা আত্মমর্যাদাবোধ গড়ে ওঠেছিল । কিন্তু সেই জিনিসটিই আজ হুমকিতে পড়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে ।

মেরিন একাডেমির ৫১তম ব্যাচের পাসিং আউট প্যারোডটি প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে । এটি নিয়ে বর্তমান মেরিন একাডেমি প্রশাসন বেশ উৎফুল্ল মনে হয়েছে । তাদের সেই উৎফুল্ল ভাব আমার মত অনেককে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে । অনেক প্রাইমারী স্কুলের ছেলেমেয়েদের সাথেও প্রধানমন্ত্রীকে ভিডিও কনফারেন্সিং করতে দেখা যায় । কাজেই এটি ঐতিহ্যবাহী মেরিন একাডেমির জন্যে কী আলাদা গুরুত্ব বহন করছে , তা মাথায় ঢুকছে না ।

অনেকেই মনে করছেন , ভিডিও কনফারেন্সেই যখন উদ্বোধন করতে হবে , তখন রাণী এলিজাবেথকে দিয়ে করাতে পারলেই উত্তম হবে ।
আমাদের কী দরকার পড়েছে , দুধের স্বাদ এমন কিছিমে ঘোল দিয়ে মেটানোর জন্যে ?

এখানে সরকার প্রধানের ডিজিটাল উদ্বোধনের চেয়ে ড: ইউনূস কিংবা ফজলে হাসান আবেদের মত গ্লোবালি পরিচিত ব্যক্তিত্ব দিয়ে স্বশরীরে উদ্বোধন করালেই অনেক ভালো হতো । ইন্ডিয়ায় সৌরভ গাঙ্গুলিকে দিয়েও অনেক প্রতিষ্ঠানের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হয় । অন্তত:পক্ষে এই প্রতিষ্ঠানের ক্যাডেটদের চাকুরি নিয়ে যখন সমস্যা দেখা দিয়েছে , তখন ড: ইউনূসের উপস্থিতি অন্য রকম গুরুত্ব বহন করতো । অথচ বিষয়টি আমাদের ভাবনাতেও আসে না । প্রধানমন্ত্রীকে এইভাবে ডিজিটালি খুশি করানোর চেয়ে ড: ইউনূসের মত ব্যক্তিত্ব এই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব ও গৌরবকে গ্লোবালি ছড়িয়ে দিতে পারতেন ।
মূল সমস্যা আমাদের মননে ও মগজে । যতই কষ্ট হোক , আমাদের চিন্তাভাবনাকে এভাবেই টার্ন করতে হবে ।

Comments are closed.